কবিতা: অদ্বৈত প্রেম
ঈশ্বর কি কয়েকটি ভাগে বিভক্ত?
না কি চোখেই তাঁকে ছিন্ন করে ফেলি--
হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান বলে?
বিভক্ত করি শাক্ত, বৈষ্ণব আর শৈব রূপে--
যেন তিনি এক নন, বরং আমাদের বিশ্বাসের মতো খণ্ডিত।
শ্রীচৈতন্য নৃত্য করেছিলেন রাধার নামে,
কিন্তু প্রেম ছিল তাঁর এক, বিশুদ্ধ এবং সর্বজনীন।
তিনি কখনো জিজ্ঞাসা করেননি--কালীকে কেউ মানে কি না।
কারণ প্রেম তো পরম সত্য, বিভেদ নয়।
রামকৃষ্ণ বলতেন,
"যত মত, তত পথ।"
তাঁর কাছে কালী ছিলেন মা, কৃষ্ণ ছিলেন লীলা,
আর সব পথেই তিনি খুঁজেছেন সেই এক রস, এক তত্ত্ব--
যা নামের ঊর্ধ্বে..ধর্মের ঊর্ধ্বে..প্রার্থনারও ঊর্ধ্বে।
তবু আমরা ছুরি চালাই দেবতার গায়ে--
বলি, এইটা আমাদের আর ওটা ওদের
তাঁদের ভাগ করি মন্ত্রে, শাস্ত্রে, উপাসনায়।
হয়তো আমরা বুঝে উঠিনি--ঈশ্বর কাউকে বাদ দিয়ে ঈশ্বর হতে পারেন না।
যে প্রেমে দ্বন্দ্ব নেই, যে ধ্যানে দল নেই--
সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন চৈতন্য,
সেখানে হাসেন পরমহংস, বিবেকানন্দ।
তাঁদের চোখে ঈশ্বর রূপ নেন হৃদয়ের নির্মলতায়
আর ভক্তির নিঃশব্দ স্পর্শে।
বুদ্ধ, যীশু, মুহাম্মদ--কারো বাণীতে ছিল না কোনো বিভাজনের ভাষা;
তাঁরা সকলেই শিখিয়েছেন--প্রেমেই ঈশ্বর, আর মানবতাই ঈশ্বরের প্রথম প্রকাশ।
অতএব নাম নয়, শাস্ত্র নয়--
যদি খুঁজতেই হয় ঈশ্বরকে
তবে খোঁজো সেই শান্ত ধ্বনিহীনতায়,
যেখানে কারও উপাসনা অন্যের ঘৃণায় না ভাঙে
আর প্রেম ছুঁয়ে যায় নিভৃতে, রূপ ও ভাষার ঊর্ধ্বে।
লেখক: কবি মানিক পাল, বালাগঞ্জ সিলেট।
Editor and Publisher: Foysol Ahmed Malik,
Office: Osmaninagar, Sylhet bangladesh. Email: sylhetbdview@gmail.com,
Mobile: WhatsApp: 01711338911
www.sylhetbdview.com