আপনি কতটুকু সচেতন: তাজুল ইসলাম


admin প্রকাশের সময় : মে ২১, ২০২৫, ৭:৪৬ অপরাহ্ন /
আপনি কতটুকু সচেতন: তাজুল ইসলাম

সিলেট বিডি ভিউ:আপনি কোন প্রতিষ্ঠানের অভিভাবক, পরিচালক, মুহতামিম কিংবা প্রিন্সিপাল। আপনার অধিনস্তদের ভিতর কি পরিস্থিতি বিরাজমান, কোথাও জ্বলছে কিনা তুষের আগুন, কোন অবিচার অনিয়ম দুর্নীতি নোংরামি সম্মানহানি চলছে কিনা সেটা আপনি যাচাই করবেন কিভাবে?

প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার যদি সেইসব কাজে জড়িত থাকে তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ খোদা হাফিজ! সেখানে এমন কোন অপরাধ নেই যা সংগঠিত হবেনা। গায়ের জোর, প্রভাব লোভ লালসা দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চলে বিভিন্ন প্রকার অপরাধ। তাই প্রথম প্রয়োজন যে কর্ণধারকে সৎ আদর্শবান ও ভালমানুষ হতে হবে। আইনের শাসন কায়েম থাকতে হবে। নতুবা সরলতার সুযোগ অনেক ক্রিমিনাল গ্রহন করবে।
আপনার প্রতিষ্ঠানে অভিযোগ বক্স রাখেন। যাতে সকলের কান খাড়া থাকে। অপরাধ সংঘটিত হবার পর বিচার করার চেয়ে অপরাধের পথ অবরুদ্ধ করে রাখবেন অগ্রিম।
ন‍্যায়বান হবেন। সকলের সাথে ইনসাফের বর্তাও করবেন। দেখবেন সবাই শ্রদ্ধা করবে। প্রতিষ্ঠান উন্নতির দিকে আগাবে ইনশাআল্লাহ।
ভাল নামি দামি শিক্ষক হলেই লেখাপড়া আগায় না। সিস্টেম বা নিয়ম নীতি পদ্ধতির অনুসরন করলে মেধার বিকাশ ঘটবে।
আজকাল সরকারি প্রতিষ্ঠান গুলো রেজিস্ট্রেশন বহাল রাখার জন‍্য জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে ভাল মানের লেখাপড়ার ভুয়া উন্নতি দেখায়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত‍্য যে অধিকাংশ কওমি মাদ্রাসা গুলোর মধ‍্যে ভাস রিজাল্টের প্রতিযোগিতা চলে। মেধা ও মানুষ গড়ার প্রতিযোগিতা নেই। আছে লোক দেখানো ভেল্কিবাজি।

আপনি দেখবেন অনেক বালিকা মাদ্রাসা আছে। যা মহিলা মাদ্রাসা হিসাবে পরিচিত। ক্লাসরুম এমন ভাবে গঠিত যেন কোন পোক পরিন্দার দেখা না মিলে। শাওয়ার রুমের জানালার মত জানালা গুলো বস্তার টাট দিয়ে বন্ধ করে রাখা। আলো বাতাস প্রবেশের সুযোগ
নাই। সবক একটাই ঝপমালা করেছে মেয়েদের পর্দার ভিতর পারলে ডাব্বার ভিতর রাখলে আরো ভাল। তাদের সুস্থতার জরুরত নাই। মানসিক প্রশান্তির প্রয়োজন নাই। ভিজা চুল শুকানোর সুযোগ নাই। চর্মরোগ মানসিক অসুস্থতা হোক কিছু যায় আসেনা। তাকে জেলের কুটিরিতে রেখে আগে টাইটেল নামটা গলায় ঝুলিয়ে দাও। পুরুষদের টাইটেল ১২-১৪ বছর লাগলেও হাইব্রিড সিস্টেমে মেয়েরা টাইটেল কামায় মাত্র ৫-৬ বছরে। কি আজব দুনিয়া! ঘরে ঘরে মরিয়ম আর রাবেয়া বসরীর আবির্ভাব হবে।
আমি বিগত ১৫ বছর যাবত চেষ্টা করছি আমাদের প্রাইমারি লেভেলে টাইটেল পাশ মুআল্লিমা নিয়োগ দিতে। সম্ভব হয়নি এখনো। নিয়োগ পরীক্ষায় তারা সেই মানের দক্ষতা দেখাতে পারেননি। অথচ আইএ বিএ পাশ মেয়েদের সামান‍্য ট্রেনিং দিলে তারা তাদের যোগ্যতা প্রামাণ করতে পারংগম। এই দুরাবস্তার জন‍্য কারা দায়ী তাহলে? স্কুল কলেজে দীন নাই। আর মাদ্রাসা গুলোতে নাই বাস্তবতা।
পর্দা মানে কি?
নারীদের ছায়া দেখা যাবেনা, কথা বলা যাবেনা। কিন্তু মুহতামিম নামক পুরুষ সাহেবের জন‍্য সবকিছুই জায়েজ। মার্কেটে দোকানে প্লেনে হাসপাতালে প্রাণ খোলে কথা বলতে অসুবিধা নাই। শুধু অসুবিধা মসজিদ মাদ্রাসার আংগিনায় বা অফিসে বসে শরয়ী হিজাব পালন করে মিটিং করলে। এত মুর্খতা রাখি
কই!
যে পুরুষ নারী দেখলেই ভাবে অজু গেল! তার কাছে নারী অনিরাপদ হয়ে উঠে তার তো ঈমানে খলল আছে। এর মানে এইনা যে গায়ের শরয়ী পন্থায় মেলামেশা করবেন। বরং শরয়ী বাউন্ডারি মেন্টেইন করে নারীদেরও একসেস দিতে হবে সমাজে অফিস আদালতে জায়েজ পন্থায়। নৈতিকতার ভিতর। অনৈতিক কাজ দু’ভাবে হয়। এক হল নির্লজ্জতার মাধ‍্যমে। অপরটি হল আলোবাতাস থেকে বনচিত করে, অমানবিক পরিবেশে জেলের কুঠোরিতে জীবন যাপনে তাদের বাধ্য করার মাধ‍্যমে।
আমাদের আসতে হবে এ’তেদালের ভিতর। বাস্তবতায় ও বিচক্ষণতায়।
সুস্থ সুন্দর স্বাস্থ্য সম্মত পরিবেশ হোক প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের সৌন্দর্য। ভন্ডামি ভেলকিবাজির জগৎ থেকে বেরিয়ে আসা সময়ের দাবী।

লেখক: খতিব তাজুল ইসলাম, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সমাজসেবক, কওমি মাদরাসা শিক্ষা সংস্কার আন্দোলনের রূপকার।